শ্রীবৈষ্ণব-সম্মেলনীর পরিচালন-পদ্ধতি সম্পর্কে লিখিত
- The Symbol of Faith
- Jan 27
- 2 min read

[ শ্রীবৈষ্ণব-সম্মেলনীর পরিচালন-পদ্ধতি সম্পর্কে লিখিত ]
শ্রীশ্রীগুরু-গৌরাঙ্গৌ জয়তঃ
শ্রীদেবানন্দ গৌড়ীয় মঠ
পোঃ নবদ্বীপ (নদীয়া)।
ইং ২১৷০৮৷৬৬, রাত্র– ৭টা
শ্রীশ্রীবৈষ্ণবচরণে দন্ডবন্নতিপূর্ব্বকেয়ম,
* * * প্রভু! আপনাদের "তাম্রলিপ্ত গৌড়ীয়-বৈষ্ণব-সম্মিলনীর” প্রতিনিধি স্বরূপ * * * * দাসাধিকারী ভক্তিশাস্ত্রী প্রভু আমার নিকট সমিতির পরিচালনের পদ্ধতি সম্বন্ধে লিখিয়া জানাইতে বলিল। তাহাতে আমার বক্তব্য বিশেষ কিছুই নাই। তবে কয়েকটি নিম্নে লিখিয়া জানাইতেছি। তাহাতে আমাদের সকলেরই একমত। যথা —
১) গৌড়ীয়-বৈষ্ণবের আচার-যাহা শ্রীল প্রভুপাদ প্রবর্ত্তন করিয়াছেন তাহা সর্ব্বতোভাবে রক্ষা করিতে হইবে। কেহ তাহা হইতে স্বেচ্ছায় হউক্, আনিচ্ছায় হউক পতিত বা ভ্রষ্ট হইলে তাহাকে সংশোধন করিবার চেষ্টা করিতে হইবে। সংশোধনের সম্ভাবনা না থাকিলে তাহাকে দুঃসঙ্গজ্ঞানে পরিত্যাগ করিতে হইবে অথবা ক্ষেত্র-বিশেষে তাহা হইতে নিরপেক্ষ থাকা দরকার ।
২) বৈষ্ণবমাত্রেরই লাঙ্গলচাষ নিষিদ্ধ নহে, ইহা প্রচার করা কর্তব্য। 'হরিভক্তিবিলাস' গ্রন্থ এবং "সৎক্রিয়াসার-দীপিকা"য় এ-সম্বন্ধে নির্দেশ আছে, তাহা ছাড়া শ্রীল প্রভুপাদ স্বয়ং ইহা অনুমোদন করিয়া গিয়াছেন। ইহার বিরুদ্ধবাদিগণ শ্রীল প্রভুপাদের এবং গোস্বামিগণের বিরোধী বলিয়া তাহারা সমিতির সদস্য হইবার অযোগ্য।
৩) গোস্বামী-শাস্ত্রের বিরুদ্ধ কোন সামাজিক বা প্রাদেশিক আচার-ব্যবহার স্বীকার করা হইবে না।
৪) বংশ বা জাতিগত ব্রাহ্মণ শ্রীল প্রভুপাদের প্রতিষ্ঠিত দৈব-বর্ণাশ্রমের বিরুদ্ধে কোন কথা বলিতে গেলে বা কোন আচার অনুমোদন করিলে সমিতি তাহার ঘোরতর প্রতিবাদ করিবে। শুধু তাহাই নহে, তাহাদিগকে বৈষ্ণব- অপরাধী দুঃসঙ্গ বলিয়া ত্যাগ করিবে। প্রয়োজন হইলে বিরাট সভা আহ্বান করিয়া তাহাদিগকে দৈব-বর্ণাশ্রম স্বীকার করাইতেই হইবে। ইহাতে ব্রাহ্মণ ব্যতীত অন্য যে কোন বর্ণের লোক যদি আপত্তি উত্থাপন করে তাহাদের সকলের পক্ষেই উক্তরূপ বিধান ব্যবস্থা করা হইবে।
৫। শ্রাদ্ধ-বিবাহ-অন্নপ্রাশন প্রভৃতি উপনয়নাদি সমস্তই শ্রীগোপালভট্ট গোস্বামীর "সৎক্রিয়াসার দীপিকা" ও "সংস্কার দীপিকানুসারে” কার্য্য হইবে। কোন স্মার্ত বা দেশীয় প্রথা অনুমোদন করা হইবে না। পূজাপার্ব্বণাদিতে এবং ব্রত-নিয়মাদির পালন সম্বন্ধে "হরিভক্তিবিলাস" ও তাহাতে শ্রীল সনাতন গোস্বামীর টীকা এবং উক্ত সৎক্রিয়াসার-দীপিকাদি” যাহা গৌড়ীয় মঠ হইতে প্রকাশ হইয়াছে তাহা অবলম্বন করা হইবে। সহজিয়াদের বা তেরো অপসম্প্রদায়ের গ্রন্থ বা আচার-বিচার প্রমাণ বলিয়া গৃহীত হইবে না।
৬। বৈষ্ণবের ব্যবহারিক জীবনের রীতিনীতি শ্রীল প্রভুপাদ যাহা প্রবর্ত্তন করিয়াছেন তাহাই গ্রাহ্য এবং তাহার অনুকূলে "হরিভক্তিবিলাসে"র পদ্ধতি অনুসারে শাস্ত্র-সম্মত অনুষ্ঠান স্বীকার্য্য।
৭) শ্রীল প্রভুপাদের প্রতি শ্রদ্ধাবিশিষ্ট যে-কোন ব্যক্তি সমিতির সভ্য হইবার যোগ্য কিন্তু তাহাদের অবিমিশ্র শুদ্ধ আচার হওয়াই বিশেষ প্রয়োজন।
৮) অন্যান্য বিধি-বিধান পরে নিদ্দিষ্ট হইবে। ইতি—
প্রণত-বৈষ্ণবাসানুদাস— শ্রীভক্তিপ্রজ্ঞান কেশব
Comments