আমাদের জঘন্য অন্তঃকরনে কি আছে, শ্রীল প্রভুপাদ তা সবই দেখিতে পান।
- The Symbol of Faith
- Nov 5, 2024
- 2 min read

আমাদের জঘন্য অন্তঃকরনে কি আছে, শ্রীল প্রভুপাদ তা সবই দেখিতে পান।
— শ্রীশ্রীল শ্যাম দাস বাবা মহারাজ
একদা জনৈক ব্যক্তি নিজ পুত্রের হরিনাম ও দীক্ষার জন্য শ্রীল প্রভুপাদের চরণে পুত্র কে লইয়া উপস্থিত হন। প্রকৃতপক্ষে তিনি কেবলমাত্র তাঁহার পুত্রের জন্যই শ্রীল প্রভুপাদের নিকট আসিয়াছিলেন, কিন্তু শ্রীল প্রভুপাদের নিকট হইতে হরিকথা শ্রবন করাতে, তাঁহাকে ও তাঁহার বিশুদ্ধ আচরণ, অপ্রাকৃত কার্য্যকলাপ তথা তাঁহর শরীর হইতে নির্গত তেজরাশি দর্শন করাতে, এবং তাঁহার কৃপা অনুভব করাতে, সেই ব্যক্তি হৃদয় হইতে শ্রীল প্রভুপাদের প্রতি প্রবল আকর্ষণ অনুভব করিলেন এবং তিনি শ্রীল প্রভুপাদের নিকট হরিনাম গ্রহণের সিদ্ধান্ত নেন।
সময়টা ছিল শ্রীগৌর-পূর্ণিমার এবং সেই সমস্ত ভক্ত যাহারা শ্রীল প্রভুপাদের নিকট হরিনাম প্রাপ্তির অভিলাষী, ইতিমধ্যেই তাঁহাদের প্রাথমিক পরীক্ষার পর তাঁহাদের সকলের নামের একটি তালিকা করা হইল। ওই সকল প্রার্থী ভক্তগণ ক্ষৌরকর্ম্ম সম্পন্ন পুর্ব্বক নুতন বস্ত্র পরিধান করিয়া প্রস্তুত ছিলেন।
তারপর সেই ব্যক্তিটি শ্রীল প্রভুপাদের নিকট হইতে দীক্ষা প্রাপ্তির তীব্র আকাঙ্ক্ষা নিয়ে নিজ ক্ষৌরকর্ম্ম
ইত্যাদি সম্পন্ন করিয়া নুতন বস্ত্র পরিধান করিলেন
অতঃপর তিনিও পূর্ণ ধৈর্য্য সহকারে শ্রীল প্রভুপাদের কক্ষের উদ্দেশ্যে হরিনাম ও দিক্ষা প্রর্থী ভক্তগনের পঙ্কতিতে দাঁড়াইয়া থাকিলেন।
কিন্তু জনৈক ভক্ত যিনি পঙ্কতিটি পরিচালনা করিতেছিলেন, তিনি সেই ব্যক্তিকে ভর্ৎসনা করিয়া বলিলেন- "তুমি হরিনাম নিতে পারবে না, কারণ তুমি ধূম্রপান কর"। এই কথা শুনি ব্যক্তিটি কাঁদিতে কাঁদিতে বলিতে লাগিল— “আমি প্রতিজ্ঞা করছি আজ থেকে আমি আর কোনদিন সিগারেট স্পর্শ পর্য্যন্ত্য করব না, এসব কিছু দূর করে দেবো। আমি আমার এই শেষ বয়সে, যেকোন মুহুর্ত্তে মারা যেতে পারি, তাই দয়া করে! আমায় হরিনাম গ্রহণ করতেই হবে।”
কিন্তু সেই ভক্ত কিছুতেই রাজি হইলেন না ও পুণরায় ব্যক্তিটিকে বলিলেন— “আপনার হরিনাম নেওয়া হবে না”। ইতিমধ্যে, শ্রীল প্রভুপাদ সেই ব্যক্তির হৃদয় জানতে পারেন তথা সেই ব্যবস্থাপক ভক্তটীকে ডেকে বলিলেন যে,– “আমি তাঁকে হরিনাম দেব”। আবার সেই ভক্ত বলিলেন যে—“ প্রভুপাদ! এই লোকটা এখনও ধূম্রপান করে, আমরা তাঁকে গতকালই দেখেছি”।
কিন্তু তথাপিহ প্রভুপাদ বলিলেন – “ওকে আমার কাছে নিয়ে এস”। এই স্থানে কেন শ্রীল প্রভুপাদ সেই ব্যক্তিকে হরিনাম দিতে চাহিলেন ইহাই প্রধান প্রশ্ন? প্রভুপাদ বুঝিতে পারিলেন যে সেই ব্যক্তিটি সত্যই-সত্যই নিষ্কপটতার সহিত হৃদয় হইতে কথা বলিতেছিল, যে কথা অর্থহীন নহে। বিভিন্ন ধরনের কথা আছে, একটি মন হইতে আসে, একটি বুদ্ধি হইতে এবং আরএকটি হৃদয় হইতে। এবং শ্রীল প্রভুপাদ সেই ব্যক্তির মধ্যে শরণাগতির প্রকৃত লক্ষণ উপলব্ধি করিলেন, সেই কারণেই তিনি তাঁহাকে হরিনাম প্রদানে বাধ্য হইলেন।
গৌর হরি হরি বোল!
Comentarios